লাদেন নিহত
আল-কায়দা নেতা ওসামা বিন লাদেন নিহত হয়েছেন। পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদের কাছে একটি বাড়িতে রোববার মার্কিন সৈন্যদের সঙ্গে এক বন্দুকযুদ্ধে পরিবারের অনান্য সদস্যসহ নিহত হন সংগঠনটির শীর্ষ এ নেতা। তবে কোন এলাকায় এ বন্দুকযুদ্ধ হয়েছে ও কখন হয়েছে সে সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি। মার্কিন সেনাবাহিনী এ অভিযান চালায়। দুই মার্কিন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টারসহ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে তন্ন তন্ন করে যাকে পাহাড়ে ও জঙ্গলে খুঁজে বেড়ানো হচ্ছিল সেই লাদেনের মৃত্যুর খবরে রোববার রাতে জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া এক টেলিভিশন ভাষণে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেন, আল-কায়েদাকে পরাজিত করার চেষ্টায় সংগঠনটির প্রধানের মৃত্যু যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় অর্জন। এদিকে লাদেনের মৃত্যুর ঘোষণায় হোয়াইট হাউজের সামনে উল্লাস প্রকাশ করতে থাকে মার্কিনিরা।
সামরিক কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থাগুলো জানিয়েছে, অল্প সংখ্যক সেনা সদস্য এ অভিযানে অংশ নিয়েছে। এতে পাকিস্তান সেনা সদস্যরা অংশ কিংবা সহযোগিতা দিয়েছে কি-না তা জানা যায়নি। অভিযানে দু'পক্ষের মধ্যে গোলাগুলিতে বিন লাদেন নিহত হন বলে দাবি করা হয়েছে। দুর্ধর্ষ এ গেরিলা নেতার মরদেহ সনাক্ত করার পাশাপাশি তা মার্কিন সেনাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলেও জানিয়েছে মার্কিন সেনা কর্মকর্তারা। তবে গোলাগুলিতে মার্কিনিদের পক্ষে কেউ হতাহত হয়নি বলে জানানো হয়েছে।
বিন-লাদেনকে হত্যার আনুষ্ঠানিক ঘোষণার পর পরই বিশ্বজুড়ে মার্কিন কূটনৈতিক মিশনে সবর্োচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। একইসঙ্গে মার্কিন নাগরিকদের সতর্ক থাকারও নির্দেশ দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়। ওসামা বিন-লাদেনের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর আল-কায়েদা পাল্টা হামলা চালানোর আশঙ্কায় এ সতর্কতা জারি করা হয়।
নিউ ইয়র্কের টুইন টাওয়ারে ৯/১১'র সন্ত্রাসী হামলার মুল পরিকল্পনাকারী হিসেবে বিন-লাদেনকে অভিযুক্ত করে আসছে মার্কিন প্রশাসন। ওই ঘটনার এক দশক পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় শত্রু হিসেবে চিহৃিত লাদনকে হত্যার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া হলো। আশির দশকে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন সমর্থিত আফগান কমিউনিস্ট শাসন বিরোধী লড়াই দিয়ে পরিচিত হয়ে উঠেন ওসামা বিন-লাদেন। ওই লড়াইয়ে আমেরিকার পক্ষ হয়ে সোভিয়েত ইউনিয়ন সমর্থিত আফগান সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করেন তিনি। সোভিয়েত ইউনিয়ন সমর্থিত সরকারের পতনের পর আফগানিস্তানের পট-পরিবর্তন নিয়ে বিরোধ দেখা দেয় ওসামা বিন লাদেনের। এক পর্যায়ে মার্কিন ফেডারেল ব্যুরো অব ইভেস্টিগেশন (এফবিআই)'র মোস্ট ওয়ান্টেড তালিকায় উঠে আসে সৌদি আরবে জন্মগ্রহনকারী ওসামা বিন লাদেনের নাম। নব্বুইয়ের দশকে বিশ্বব্যাপী মার্কিন সামরিক স্থাপনা ও সৈন্যদের বিরুদ্ধে দুর্ধর্ষ অভিযান চালানোর জন্য তাকে অভিযুক্ত করা হয়। এর মধ্যে ১৯৯৩ সালের অক্টোবরে সোমালিয়ায় মার্কিন সৈন্যদের উপর হামলা, ১৯৯৮ সালের আগস্টে পুর্ব আফ্রিকায় দুই মার্কিন মিশনে হামলা এবং ২০০০ সালের অক্টোবরে রণতরী ইউএসএস কোলে হামলা চালিয়ে ১৭ নৌ-সেনাকে হত্যার ঘটনা অন্যতম।